Posts

মুক্তির ফাঁদ!

১৪ই আগস্ট, ১৯৪৭ সাল। গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে দৌরে যাচ্ছে এক যুবক। মুক্তির আনন্দে সে উদ্ভাসিত।  “চাচা, কি করেন?”  “বাবা! ধান কাটি”  “আর কত ধান কাটবেন চাচা? আর কোনো কষ্ট নাই! আজ থেকে আমরা স্বাধীন। হিন্দুদের সাথে আর আমাদের দাঙ্গা হবে না। আমরা সব মুসলমান ভাইরা মিলে একসাথে থাকবো। আজ থিকা আমরা পাকিস্থানি।“  “আলহামদুলিল্লাহ! বাবা! খুব ভাল খবর।“  ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১সাল। গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে দৌরে যাচ্ছে এক যুবক। মুক্তির আনন্দে সে উদ্ভাসিত। “চাচা, কি করেন?” “বাবা! ধান কাটি” আর কত ধান কাটবেন চাচা? আর কোনো কষ্ট নাই! আজ থেকে আমরা স্বাধীন। পাকিস্থানিরা আর আমাদের শোষণ করতে পারবো না। আমরা সব ধর্মের মানুষরা মিলে একসাথে থাকবো। আজ থিকা আমরা বাংলাদেশি। "আলহামদুলিল্লাহ বাবা! খুব ভাল খবর।" ডিসেম্বর মাস, ১৯৯০ সাল। গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে দৌরে যাচ্ছে এক যুবক। মুক্তির আনন্দে সে উদ্ভাসিত। “চাচা, কি করেন?” “বাবা! ধান কাটি” আর কত ধান কাটবেন চাচা? আর কোনো কষ্ট নাই! আজ থেকে গণতন্ত্রের মুক্তি। স্বৈরাচার সরকার আর আমদের উপর জুলুম করতে পারবো না। আজ থেকে আমরা ভোট দিয়া সরকার নির্বাচিত করমু। "আলহামদুলিল্লাহ বাবা!

ভালোবাসাই সমাধান! পার্ট-২

রাত হয়েছে অনেক। বাসায় ফিরতে হবে। কাফরুলে এসে দেখি শ'খানেক রিক্সা। সচরাচর এরকম দৃশ্য চোখে পরে না। বরং উল্টোটা দেখেই অভ্যাস্ত। কাছাকাছি যেতেই সবাই ঘিরে ধরল "মামা! আসেন" বলে।  ভাবলাম আজই সূযোগ বদলা নেওয়ার। ৪০ টাকার ভাড়া বহুবার ৫০/৬০ টাকা দিয়ে বাসায় ফিরেছি। বললাম, ৩০ টাকা যাবা? "এইটা কি কন মামা! ন্যায্য ভাড়া ৪০ টাকা।" অসহায় ভাবে একজন জবাব দিলো। আমি কিছু না বলে অপেক্ষায় ছিলাম টোপটা কে গিলে সেটা দেখার জন্য। "আসেন ভাই" মধ্যবয়স্ক চিকন গরনের এক লোক। নিয়ম ভাঙায় নিজেই অনুতপ্ত, সগতোক্তির মতো করে বলল, " অনেকক্ষণ খেপ মারিনা"। কেউ তাতে জবাব দিলো না। আমি বীর বেশে রিক্সায় উঠলাম। রাস্তা একদম নিঃশব্দ। চমৎকার বাতাস বইছিল। এইসময় লালন না গাইলে পুর্ণতা আসেনা। গলা ছেড়ে গাইতে লাগলাম " সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে?" কিছুক্ষণ পর দেখি রিক্সাওয়ালাও গানে তাল দিচ্ছে। বললাম, কি ভাই গান গাওয়া হয় নাকি? জানালো বাড়ী কুষ্টিয়াতেই, শৈশব, কৈশোর কেটেছে লালনের আখড়াতেই। তারপর পেটের দায়ে ঢাকায়। আমার চাপাচাপিতে গান ধরল "খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেম্নে আসে যায়..." সুর

প্রেমই সমাধান!

২০১৬ এর ১৬ই ডিসেম্বর, বিজয় দিবস।চট্রগ্রাম দাবা লীগে খেলার আমন্ত্রন পেয়ে বউ কে নিয়ে যাচ্ছি এয়ারপোর্ট রেলওয়ে ষ্টেশনে। সকাল সারে ৬ টায় ট্রেন ছেড়ে যাবে তাই খুব ভোরে অন্ধকার থাকতে থাকতেই বাসা থেকে বের হলাম।রাস্তা একদম জনমানব শূন্য, কিছু ঘরছাড়া লোক ফুটপা তে , ভ্যানে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। আমরা রাস্তা পার হয়ে সিএনজির অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছি।সময় কেটে যাচ্ছে কিন্তু সিএনজির দেখা নাই। এর মধ্যে আবার কিছু লোকের ঘুম ভেঙ্গে গেছে, তারা শূন্য দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাত করেই আমার ভয় চেপে বসলো।মনে হলো এখানে   যদি কেউ ছিনতাই কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আক্রমন করে তাহলে বাঁচানোর কেউ নাই।ঘুমভাঙ্গা মানুষদের তখন আর সাধারণ মানুষ ভাবতে পারছিলাম না।তাদের চেহারায় কেমন যেন  ছিনতাইকারী, সন্ত্রাসী, মাদকাসক্তর ছায়া দেখতে পেলাম। এদিকে সময়ও বয়ে যাচ্ছে, সময়মত পৌছাতে না পারলে ট্রেনও মিস হবে। সব ভেবে আমি যখন শীতের রাতেও রীতিমত ঘামছিলাম ঠিক তখনি কুয়াশা ভেদ করে দেবদূতের মতো একটা বাস এসে আমার সামনে দাঁড়াল। ১৪/১৫ বছরের এক ছেলে ঘুমজড়ানো চোখে বাস থেকে নেমে বলল, “কই যাবেন?” বললাম “এয়ারপোর্ট”। “উঠেন” বলে নিজেই লাগেজ